header



"আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের ব্যানারে বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের নিয়ে ইফতার- ক্ষোভ বিরাজ করছে আওয়ামীলীগে।"


বেশ কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের ব্যানারে ইফতার পার্টি নিয়ে আয়ারল্যান্ডে কার্যত এখন বিতর্ক চলছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের নাম দিয়ে মূলত বিএনপি জামায়াতের কর্মীদের নিয়ে আসা হয়েছে এবং সম্মেলনকে সামনে রেখে একধরণের লোকবল দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবী আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের বিভিন্ন কর্মীদের।

ঐদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত একজন যিনি রেস্টুরেন্টে কাজ করেন নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানায়, আমাদেরকে জানানো হয়নি এটা আওয়ামীলীগের অনুষ্ঠান, ফোন করে বলা হয়েছে রেস্টুরেন্ট কর্মচারীদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে তাই আমি সহ আমার সাথে আরো তিন চারজনকে সাথে নিয়ে এসেছি। অনুষ্ঠানে এসে দেখি আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী গ্রূপের লোকজন কিছু এসেছে আর অধিকাংশই বিভিন্ন কাউন্টি সাইড থেকে বিএনপি জামায়াতের কর্মী। তিনি জানান যেই রেস্টুরেন্টে ইফতারের আয়োজন করা হয়েছিল তার অংশীদার ৩ জন। আর এই রেস্টুরেন্টের সাথে যারা জড়িত তাদের-ই একজন যিনি বর্তমানে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ-প্রার্থী আর তার আপন বড় ভাই আয়ারল্যান্ড বিএনপির সহ-সভাপতি।

ঐদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্রোহী গ্রূপের এক আওয়ামীলীগ কর্মী জানান সর্বসাকুল্যে সব মিলিয়ে লোকজন হয়েছিল ৩৫-৪০ জন কিন্তু আমাদের বলা হয়েছে ৭০/৮০ জন প্রচার করার জন্য। তিনি আরো জানান আওয়ামীলীগ সমর্থক বা সক্রিয় আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন তাদের সংখ্যা সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২২ জন হবে আর বাকি যারা ছিল তাদের কখনো দেখিনি বা চিনি না। আর কাউন্টি সাইড থেকে বৃহত্তর আওয়ামীলীগের (কিবরিয়া-বেলাল গ্রূপ) পরিচিত কোনো কর্মীকে দেখা যায় নি।

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জনাব বেলাল হোসেন জানান এবার সার্বিক পরিস্থিতি বিচার করে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের ব্যানারে কোনো অনুষ্ঠান না করার জন্য এবং এই জন্য আমাদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছিল কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে এই ধরণের অনুষ্ঠান করা দুঃখজনক। যেহেতু দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল তাই হয়তো কেউ যায়নি।

আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খান জানান, বিদ্রোহী দল সহ যারা আয়ারল্যান্ডে আওয়ামীলীগ করেন তাদের সবাইকে আমরা মোটামুটি চিনি এবং জানি। বিএনপি জামায়াতের কর্মী , রেস্টুরেন্ট কর্মীদের নিয়ে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের ব্যানারে এই ধরণের অনুষ্ঠান অনাকাঙ্খিত একটি বিষয়। অন্য কোনো নামে তারা ইফতার পার্টি করতে পারতো সেখানে কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু এইভাবে দলীয় ব্যানার ব্যবহার এবং এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

ডাবলিন আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব ফিরোজ হোসেন এই বিষয়ে কথা প্রসঙ্গে বলেন , বিএনপি জামায়েত পরিবার থেকে উঠে আসা ছেলে সে তো বিএনপি জামায়েত কর্মীদের নিয়েই বিভিন্ন অনুষ্ঠান করবে এতে অবাক হওয়ার কি আছে। দলীয় ব্যানার বা নাম এখানে তাদের কাছে একটি সাইনবোর্ড ছাড়া কিছুই না। এদের কাজ হচ্ছে আওয়ামীলীগের কর্মীদের নামে বদনাম করা ও দলের বদনাম করা। আপনারা হয়তো জানবেন ওই কথিত ব্যক্তি জার্মানিতে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষ্যে এবং সেখানে গিয়ে সে আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক খানের বিরুদ্ধে দলীয় লোকজনদের কাছে কুৎসা রোটাচ্ছিলেন কিন্তু উপস্থিত লোকজন তাকে রীতিমতো ধমক দিয়ে থামিয়ে দেন। ধমক খেয়ে থতমতো হয়ে ক্ষমা-ও চান।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ডাবলিন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার বলেন, যখন আমরা জানতে পারলাম যে কথিত ব্যক্তি বিএনপি জামায়েতের এবং এই বিষয়টি সামনে আনতেই এরা আমি সহ ডাবলিন আওয়ামীলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে নানারকম কুৎসা রটিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ঐসবে আমরা মোটেও বিচলিত নই, আমাদের কর্মীরা আর জনগণ আমাদের পাশে আছে তারা এইসব বিশ্বাস করেনি। যারা আওয়ামীলীগের ব্যানারে বিএনপি জামায়াতিদের নিয়ে লোকসমাগম করার চেষ্টা করেছে তাদেরকে কোনো দলীয় বা জাতীয় প্রোগ্রাম বিশেষ করে ২১শে ফেব্রুয়ারী বা ১৬-ই ডিসেম্বর করার কথা বলেন। আমরা দেখতে চাই কতজন আওয়ামীলীগার ওই অনুষ্ঠানে আসেন বা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।

একই কথা জানালেন ওফেলি আওয়ামীলীগের সভাপতি জনাব মামুনুর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান শুভ্র। তারা জানান আমাদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছিল,আয়ারল্যান্ড আওয়ামীলীগ নাম না ব্যবহার করে অন্য কোনো নামে করলে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা করতাম কিন্তু যেহেতু দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল তাই যোগদান করিনি।



      

[ সংবাদটি পড়া হয়েছে : 7352 বার ]